• Create A Story
  • Find A Story
  • My Story List
  • Join Our Trip
  • Create A Story
  • Find A Story
  • My Story List
  • Join Our Trip

অল্প টাকায় থাইল্যান্ড গিয়ে ব্যাংকক - ফুকেট সফর 3

মেঘকে ছাড়িয়ে উপরে যাবার পূর্ব মূহুর্ত। ব্যাংকক শহরের একটি ছবি
A Travel Guide
In
194 views

অল্প টাকায় থাইল্যান্ড গিয়ে ব্যাংকক - ফুকেট সফর

থাইল্যান্ড ভ্রমণ

09 Dec 2019, 01:12 am
( 3506 words, Reading Time: 17.53 min)

মূলত যারা অল্প টাকায় থাইল্যান্ড গিয়ে ব্যাংকক - ফুকেট সফর করতে চান এই পোস্ট তাদের জন্যে। পোস্টটি দীর্ঘ হবার কারণ খুঁটিনাটি লিখা যা আপনাকে থাইল্যান্ড ট্যুরে বেশ কিছু টাকা বাঁচাতে সাহায্য করবে।

শুরু করা যাক তাহলে!!

ভিসাঃ

ভিসা পাবার জন্যে আমি সিম্পলি একটা এজেন্সী কে আমার পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় পেপারস দিয়ে দিয়েছি আর দিয়েছি ৪০০০ টাকা। (২০১৯-এ ফি হল ৪৩০০/- টাকা) যার কারণে আমার হ্যাসেল হয় নি। ভিসা ফি ৩৪৫০/= (২০১৯-এ ফি হল ৩৮৪০/- টাকা) তারা আমার বাসায় এসে আমার সব পেপারস নিয়ে গিয়েছে এবং আটদিন পর আমার ঘরে এসেই আমার পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে। যার কারণে এই অতিরিক্ত সার্ভিস ফী টা আমার গায়ে লাগেনি। আমার মনে হলো ছোটাছুটি করতে আমারো এমনই খরচ হবে তাই এজেন্সী ই বেছে নিলাম। এছাড়াও লোক মুখে শুনি যে ম্যাক্সিমাম থাই ভিসা পার্সোনাল ভাবে করতে গেলে হয় না। এটা কতোটুকু সত্য বা মিথ্যা আমার জানা নেই। তবে কোনো কোনো এজেন্সি ৩৭০০ টাকায় ও ভিসা করতে হেল্প করেন এমন পোস্ট ও আমার নিউজফীডে এসেছে। একটু খুঁজলেই পেয়ে যাবেন। বেশিরভাগ এজেন্সি ই ৪০০০ টাকা নিয়ে থাকে।

ভিসা দেওয়ার আগে এম্বাসী থেকে আমাকে কল দিয়ে প্রায় ১২ মিনিট কথা বলে অনেক অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলো। এই ফোন টা না ধরতে পারলে সম্ভবত ভিসা দেয় না থাই এম্বেসী। কলটা এসেছিলো পাসপোর্ট জমা দেবার পাঁচদিনের মাথায়।

এই ভিসার জন্যে আমি ব্যাংক ব্যালেন্সে ৬০০০০ টাকা রেখে তার স্টেটমেন্ট নিয়ে এবং ব্যাংক সলভেন্সী সার্টিফিকেট রেখে তারপর পাসপোর্ট জমা দিয়েছি। ভিসার জন্যে কি কি জমা দেওয়া লাগে তা এম্বেসীর ওয়েব সাইটে পাবেন। দয়া করে ভিসা পাবার আগ পর্যন্ত ঐ ৬০০০০ টাকা থেকে ব্যাংক ব্যালেন্স কমাবেন না। টাকা বেশি থাকলে ক্ষতি নেই, কম থাকলে হয়তো ঝামেলা হতে পারে বলে শুনেছি। আর ভিসা জমা দেওয়ার পর থেকে রবি-বৃহস্পতি সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত মোবাইলের দিকে খেয়াল রাখবেন। খুব স্পষ্ট ভাষায় সত্যি কথা জানাবেন তাদের। আপনার মাঝে কনফিউশন পেলেই আপনার ভিসা দেওয়া রুখে দিতে পারে। এতে এজেন্সির হাত নেই কোনো। সব পেপারস যেনো ঠিক থাকে এ ব্যাপারে সাবধান থাকবেন।

ছবি থাই ভিসার জন্যে যেই মাপে প্রিন্ট করতে হয় সেই মাপে বের করবেন। যেই দোকান থেকে ছবি প্রিন্ট করবেন তারা জানে থাই ভিসার জন্যে ছবির মাপ কতো।

প্লেন টিকেটঃ

ঢাকা থেকে ব্যাংকক যাবার বিভিন্ন প্লেন আছে।সেগুলার ডিটেইল অনলাইনে পেতে ঝামেলা হবেনা।

ব্যাংকক থেকে ফুকেটে যাবার কথা বলি। ভুলেও বাসে যাবেন না। বাসের ভাড়া প্লেনের ভাড়ার চাইতে বেশি/সমান/সামান্য কম এবং সময় লাগে ১২-১৬ ঘন্টা। যদিও আরামদায়ক তবুও যেহেতু এর চাইতে কম টাকায় দশ ভাগের এক ভাগ সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানোর সময় আপনার আছে সেহেতু কোনো মানেই হবেনা বাসে যাবার সিদ্ধান্ত নেবার। আর ব্যাংকক থেকে ফুকেট যাবার প্লেন কোম্পানি ও নেহায়েত কম নয়। ঢাকা থেকে ব্যাংকক এর টিকেট আপনি যেই কোনো বিমানে কাটতে পারেন।

তবে নেমেই যদি আবার ফুকেটের জন্য বিমান ধরতে চান তাহলে সময়টা সাবধানে সিলেক্ট করবেন।

দুইটা সিনারিও বলিঃ

১. বাংলাদেশ থেকে ছেড়ে যাওয়া আপনার প্লেন টি নামবে ব্যাংকক সুবর্ণভূমি এয়ারপোর্ট। এটা অনেক বড়। ইমিগ্রেশন পর্যন্ত পৌঁছাতে আমার আধা ঘন্টা সময় লেগেছে হাঁটা পথে। এখন ঘটনা হলো এয়ার এশিয়া,থাই লায়ন এয়ার বা নক এয়ারের মতো সাশ্রয়ী প্লেন গুলো ছাড়ে ব্যাংকক এর ডন মুয়াং এয়ারপোর্ট থেকে। আপনি যদি ব্যাংকক নেমে আবার ডন মুয়াং থেকে উঠে ফুকেট যেতে চান তবে অবশ্যই ব্যাংকক ল্যান্ডিং এবং ডন মুয়াং এর ফ্লাইং টাইম এর দূরত্ব রাখবেন ৪-৬ ঘন্টার। তাহলে চিন্তামুক্ত থাকবেন। ব্যাংকক সুবর্ণভূমি বিমানবন্দর থেকে Don Muang বিমানবন্দর যেতে আপনি এয়ারপোর্ট এর শাটল বাস/ট্যাক্সি ব্যবহার করে যেতে এক-তিন ঘন্টা সময় লাগতে পারে ট্রাফিক জ্যামের উপর ভিত্তি করে।

২. এক্ষেত্রে আমি বিশেষভাবে টিওবি হেল্পলাইন মেম্বার বাদল ভাইয়ার কাছে কৃতজ্ঞ কেননা তিনি আমাকে Viet Jet Air এর খোঁজ দিয়েছেন এবং কিনে দিয়েছেন যা ব্যাংকক Suvarnabhumi Airport থেকেই ছাড়ে। এই প্লেনের ভাড়া ডন মুয়াং এর ওদের চাইতেও কম ছিলো। তাই আমার প্লেন সকাল ৬.৩০ এ Suvarnabhumi Airport নামার পর আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে পরবর্তীতে আবারো ঐ জায়গা থেকেই ফ্লাইট ধরতে পেরেছি কোনোরকম অতিরিক্ত ট্রাভেল ছাড়া। এছাড়াও Thai Air Ways দেখলাম ফুকেট এর জন্যে ছাড়ে ঐ Suvarnabhumi Airport থেকেই। তবে বিমান ভাড়া অনেক বেশি। সার্ভিস ও!!

মনে রাখবেন বিমানের টিকেট যতো আগে কাটা যায়, ততো কমে পাবার সুযোগ টাই বেশি। বিভিন্ন এজেন্সী বিমানের দামে তফাৎ করে থাকে। আমার সাজেশন হলো যেই বিমানেই আপনি যান না কেনো আগে নিজে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ গিয়ে দাম দেখে নিবেন। তারপর এজেন্সি তে কথা বলে দেখতে পারেন। চাইলে নিজেও টিকেট কেতে নিতে পারেন। মানে প্রাইস ক্রস চেক করার অসংখ্য সুযোগ পাবেন।

কোনো কারণে লোকাল ফ্লাইট ক্যান্সেল হলে ওরা আপনাকে জানিয়ে দেবে। কিন্তু যেহেতু আপনি বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছেন এবং যোগাযোগ এর জন্যে কোনো থাই নাম্বার এখান থেকে দেওয়া সম্ভব না সেহেতু আপনি চেষ্টা করবেন প্লেন ছাড়ার দেড় ঘন্টা আগে এয়ারপোর্ট এ উপস্থিত থাকতে। কারণ তারা নাম্বারে মেসেজ পাঠিয়ে জানিয়ে দেয় ফ্লাইট ক্যান্সেল হলে। এসে যদি এয়ারপোর্ট এর শিডিউলিং মনিটর এ দেখেন ফ্লাইট ক্যান্সেল সাথে সাথে ওদের টিকেট সেলস কাউন্টারে চলে যাবেন এবং ক্লেইম করবেন। ওরা চাইবে আপনাকে ওদের পরের ফ্লাইট এ দিতে (যদি আসন খালি থাকে)। যদি বেশি লেইটে বলে আর আপনার হাতে যদি সময় কম থাকে তাহলে আপনি মানবেন না। ওরা আপনাকে তাহলে অন্য কোম্পানির পরের ফ্লাইট এর টিকেট নিয়ে দিবে। আমার সাথে এই কাজটা হয়েছিলো। ফুকেট থেকে ব্যাংকক ফেরার দিন ৭:৫০ এ ফ্লাইট সকাল। এসে দেখি টিভি স্ক্রিন এ আমার ফ্লাইট ক্যান্সেল দেখায়। অনেক ঘুরে তাদের কাউন্টার পেলাম। আমাকে হাসিমুখ করে বলে ১১:৫০ এ তাদের ফ্লাইটে যেতে। আমি বললাম যে আমি সকাল ৫ টায় উঠে এই ক্লান্ত শরীর নিয়ে ১০০ বাথ অতিরিক্ত ট্যাক্সি ভাড়া দিয়ে আপনার কাছে এসেছি কি এই অনুরোধ শুনতে? আপনি আমার ব্যবস্থা কেমনে করবেন আমি জানি না। আমি ১১ টার মধ্যে ব্যাংকক থাকতে চাই। এইটা বলার পর তারা কই কই জানি ফোন দিলো। তারপর গিয়ে দেখি আমাদের অন্য কোম্পানির টিকেট রেডি। সেইদিন ৮:৩০ এর ফ্লাইটে আমি সিট পাই। পুরা ট্যুরে সাসপেন্স বলতে ঐ সময়টায় ই আমি বড় খতমের দোয়া পড়েছি বারবার। কারণ আমি খুঁজে পাচ্ছিলাম না কোথায় যাবো আর কি করবো। এয়ারপোর্ট ইনফরমেশন নামে বুথ আছে তাদের সবখানেই। এমন দুইটা পাবলিক সেখানে ছিলো যাদের আসলে ইংরেজি শিক্ষার খুবই অভাব। সম্ভবত লবিং করে চাকরি পেয়েছে। সেইদিন যদি ঐ কাউন্টার খুজে না পেতাম তাহলে কপালে কি ছিল আল্লাহই জানে।

বাই দ্যা ওয়ে ব্যাংককে ঢোকার সময় এবং বাংলাদেশ থেকে বের হবার সময়.ইমিগ্রেশনে হোটেল বুকিং আছে কিনা চাইতে পারে। বুকিং এর স্ক্রিনশট / প্রিন্ট কপি সাথে নিয়ে রাখবেন। দেশে ফেরত আসা পর্যন্ত একটা প্রয়োজনীয় কাগজ এমন কি বিমান টিকেট ও হারাবেন না। থাইল্যান্ড নামার আগে বিমানে একটা ফর্ম ফিলাপ করতে দেয়। ঐটা কোনোভাবেই হারাবেন না। আর রাস্তায় হাঁটতে বের হলেও পাসপোর্ট সাথে রাখবেন দয়া করে।

কারেন্সী কনভার্টঃ

সত্যি বলতে কোনো দেশের ইমিগ্রেশনেই আমার পকেটে বা মানিব্যাগে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করেনি যে আমার পকেটে টাকা না বাথ না ডলার। তবুও আমি আমার দিক থেকে ফেয়ার থেকেছি। দেশ থেকে সব টাকা ডলার করে নিয়েছি (২০০ ডলার), মানুষ ইন্ডিয়া যেতেও এর চেয়ে বেশি টাকা নিয়ে যায় 😛

যাই হোক। ব্যাংক গুলো অনেক টাকা বেশি রাখে। ইন্টারনেট থেকে নাম্বার নিয়ে কয়েকটা ব্যাংক, উত্তরা-পল্টন-গুলশানের কয়েকটা মানি এক্সচেঞ্জ এ কল দিয়ে দেখলাম ব্যাংক ছাড়া মোটামুটি সবাই কাছাকাছি চাচ্ছে। ১০-৩০ পয়সার পার্থক্য এজেন্সি দের মাঝে। গুলশান ১ চত্বরের ১২ টা দোকান ঘুরে এক জায়গায় সর্বনিম্ন মূল্যে আমি ডলার কিনেছি। সাথে সাথেই আমি সেই ডলার এমাউন্ট ২০০ টাকা দিয়ে তাদের থেকে আমার পাসপোর্ট এ ও ৫০০ ডলার এন্ডোর্স করিয়ে নিয়েছি। আপনি যদি রিস্ক নিতেও চান, মানে দেশ থেকেই সব বাথ নিয়ে যেতে চান তাহলেও আপনি ডলার এন্ডোর্স করিয়ে নিয়ে যাবেন। অন্তত কথা বলার সুযোগ পাবেন তাহলে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে।(যদিও তা অনুচিত)

ডলার থেকে বাথ করার জন্যে ব্যাংকক এয়ারপোর্টে রেট খুবই কম। নিরুপায় হয়ে আমি ৫০ ডলার ভাঙিয়ে নেই ফুকেট এয়ারপোর্ট থেকে বিচে যাবার ভাড়া দেবার জন্যে। বাকি সব টাকা আমি বিচ এরিয়া থেকেই ভাঙাই। ফুকেট ট্যুর শেষ করে ব্যাংকক এ এসে দেখি এয়ারপোর্ট এর চাইতে বেশি রেট, তবে বিচের চাইতে কম। মনে মনে আল্লাহকে ধন্যবাদ দেই যে টিওবি হেল্পলাইনের কমেন্ট এবং পোস্ট গুলো আসলেই কাজে আসছে। পাতং বিচে হাজার হাজার মানি এক্সচেঞ্জ। ভালো মতো খুঁজলেই বেস্ট রেট পেয়ে যাবেন। অবশ্যই টাকা বদলানোর সময় সাথে পাসপোর্ট রাখবেন। যেখানেই যান বিদেশে ট্যুর দিতে। পাসপোর্ট আপনার সাথে রাখবেন সর্বদা।

একটা ভালো বুদ্ধি দিতে চাই। দেশ থেকে সব টাকা ডলার করিয়ে নিলেও সাথে জনপ্রতি ১০০০ বাথ নিয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ব্যাংকক Suvarnabhumi Airport এ আপনি ডলার ভাঙাতে হবেই না, বিচে গিয়েই সব ভাঙাতে পারবেন। তাহলে লস খাবেন না নিশ্চিত। নোট অবশ্যই দেখে নেবেন এবং দেশ থেকে ডলার কেনার সময় শুধু ৫০ এবং ১০০ ডলার কিনবেন। ভুলেও এর কম নোট নিবেন না। তাহলে বিচেও আপনি এক্সচেঞ্জ রেট টা কম পাবেন। শুধুমাত্র ৫০ এবং ১০০ ডলারের নোটেই আপনি বেস্ট রেট পাবেন।

সিমঃ

বলেছিলাম বাংলাদেশ থেকে অল্প কিছু বাথ সাথে করে নিয়ে যেতে। তার একটা কারণ হলো সিম নেওয়া। ব্যাংকক Suvarnabhumi এয়ারপোর্ট থেকে আপনি সিম কিনবেন। Immigration পার হলেই পাবেন তাদের। সবচাইতে কম দামে বেস্ট আমি পেয়েছি True কোম্পানীর সিম। ৭ দিনের আনলিমিটেড ইন্টারনেট ৪জি। দেশে কল দিতে পারবেন রিচার্জ করে। দাম মাত্র ২০০ বাথ। বাকি সবাই ২০০ বাথের উপর। এটা বেস্ট সেভিংস।

ফুকেট থেকে পাতং বিচ যাওয়াঃ

ফুকেট এয়ারপোর্ট নামার পর বিভিন্ন ট্যাক্সি কোম্পানি আপনাকে আপন ভাইয়ের মতো ডাকতে থাকবে হোটেল নেবার জন্যে। যদি বাজেট ট্রাভেলার হয়ে থাকেন তাহলে দয়া করে দুই কানে তুলা দিয়ে সোজা এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে যাবেন। জাস্ট বের হলেই দেখবেন মিনিবাস সার্ভিস বিচে নিচ্ছে জনপ্রতি ১৮০ বাথ করে। বলেছিলাম না দেশ থেকে ১০০০ বাথ নিয়ে যেতে? এই বাস সার্ভিসে পে করার জন্যেও আপনাকে এই টাকাটা নিয়ে যেতে হবে। ওরা সবার হোটেলের এড্রেস নিবে। গাড়ি সাথে সাথেই ভরে যায় ১০-১২ জন। ভরলেই তারা গাড়ি ছেড়ে দিবে এবং একজন একজন করে হোটেলে পৌঁছে দেবে সবাইকে। এসি গাড়ি, চমৎকার স্পেস, লাগেজ রাখার অফুরন্ত জায়গা। আমরা যেহেতু লোকাল বাসে চড়তে পারি, আমাদের জন্যে তা যথেষ্টই আরামদায়ক। আমার খুবি ভালো এবং সাশ্রয়ী লেগেছে এই মিনিবাস সার্ভিস। তবে পথে তারা এক জায়গায় থামায়। ওখানে সুন্দরীরা আপনার হোটেল এড্রেস নিয়ে ড্রাইভারকে রুট প্ল্যান করে দিবে যে কে আগে নামবে আর কে পরে। তখনই তারা আপনাকে হাসিমুখে জিজ্ঞেস করবে আগামী কয়দিনের প্ল্যান কি। কই কই যাবেন? আপনি যদি তাদের বলেন যে আমি ফি ফি আইল্যান্ড, জেমস বন্ড আইল্যান্ড, টাইগার কিংডম যাবো তাহলেই তাদের আসল রূপ বের হয়ে আসবে এবং মরিয়া হয়ে চেষ্টা করবে আপনাকে প্যাকেজ ধরিয়ে দেবার জন্যে। এই প্যাকেজ গুলো পাতং বিচ থেকে ৯০০-১০০০ বাথে পাওয়া যায়। এই সুন্দরীরা আপনাকে ৩০০০ বাথ বলে লাস্টে ১৪০০ বাথে সেল করার চেষ্টা করবে। ভুলেও ফাঁদে পা দিবেন না কারণ এর চাইতে কম টাকায় প্যাকেজ আপনি বিচেই পাচ্ছেন। আপনি বলবেন 'My friends are already there, so they are arranging all of these' কিংবা 'I haven't decided yet,I am tired now, I will decide it later may be after arriving at the hotel' এই বিরতি টা দশ মিনিটের তাই চাইলে ফ্রেশ হয়ে নিতে পারবেন এখানেই। সর্বমোট ১-১.৩০ ঘন্টা লাগবে আপনি হোটেল পৌঁছাতে।

আপনারা যদি ৩-৪ জন মানুষ হন তাহলে ট্যাক্সি ই নিবেন। কারণ ১৮০*৪ =৭২০ বাথ। আপনি ৫৫০-৬০০ তেই ট্যাক্সি পেয়ে যাবেন, সেক্ষেত্রে মধ্য পথের বিরতীর এই ঝামেলাও নেই। এক ঘন্টার মাঝেই পৌঁছে যাবেন। চাইলে আপনি নিজেও গাড়ি ভাড়া করে চালিয়ে যেতে পারবেন। এক বাংলাদেশী ভাইয়া এই কাজটি করেছেন ফ্যামিলি নিয়ে এসে। দুইদিনের জন্য একটা প্রাইভেট কার তিনি ২০ ডলার এ ভাড়া নিয়েছেন।আগেও নাকি তিনি এসেছেন এবং ম্যাপ দেখে চলাও খুব কঠিন নয়। (ফি ফি ট্যুরে গিয়ে তার সাথে দেখা হয়েছিলো,তখন তিনি বলেছিলেন এই কথা, সত্যতা যাচাই করার সুযোগ হয়নি। সম্ভবত দিন প্রতি ২০ ডলার এবং ফুয়েল খরচ আপনার নিজের। ইন্টারনেট ঘাঁটলে আপনি এক্সেক্ট হিসেব পেয়ে যাবেন হয়তো,আমি ঘাঁটিনি)

হোটেল/হোস্টেলঃ

যেহেতু বাজেট ট্যুর নিয়ে কথা হচ্ছে তাই হোটেল খরচ টা ইম্পর্ট্যান্ট। Royal Paradise Hotel টা বিচের মোটামুটি কাছাকাছি এবং মোটামুটি সহনীয় দাম দেখলাম। তবে অনেক কম নয়। পার নাইট ১৫০০ এর উপর। আমি যেখানে থেকেছি সেখান থেকে বিচ হেঁটে যেতে ১০ মিনিট সময় লাগে। আমার প্রতি নাইট খরচ পড়েছে ৪০০ বাথ করে যা ১০০০ টাকার কাছাকাছি। সুন্দর ব্যবস্থা,ব্যবহার এবং আতিথেয়তা।

হোস্টেল আছে অসংখ্য যেখানে পার নাইট ৫০০ টাকার এমাউন্টেও থাকতে পারবেন। তবে যেখানেই যান না কেনো, আগে রূম দেখে, ওয়াশরূম এবং এসি চেক করে তারপর পেমেন্ট করবেন। তার আগে অবশ্যই না। অধিকাংশ হোটেল এবং হোস্টেল ব্রেকফাস্ট ফ্রি দেয়। বুকিং ডট কম থেকে বেছে হোটেল নিতে পারেন। অবশ্যই গেস্ট রিভিউ পড়ে নিবেন যতোটা পারেন। তাহলেও বুঝতে পারবেন বিচের কাছে না দূরে, সার্ভিস কেমন বা হোটেলের কোনো সমস্যা আছে নাকি।

থাইল্যান্ডের হোটেল গুলোর চেক ইন শুরু হয় দুপুর দুইটায়। চেক আউট হয় সকাল ১১-১২ টায়। আপনি সেভাবে বিমানের টিকেট করে নিবেন। তাহলে কষ্ট কমে যাবে। লাইক রাতে বাংলাদেশ থেকে রওনা দিবেন। ভোরে ফুকেটের প্লেন ধরবেন। তাহলে দুপুরের মধ্যে পৌঁছে যাবেন। তবে এভেইলেবল থাকলে আপনাকে তারা রূম দিয়ে দিবে যদি আগে পৌঁছান।

ঘুরা ফেরাঃ

ফি ফি আইল্যান্ডের সারাদিনের এই প্যাকেজটা ১০০০ বাথ এভারেজ সবখানে। মানে চাইবে অনেক বেশি কিন্তু দামাদামি করলে এতোটুকু আপনি পাবেন শিওর। আমি ৯০০ বাথেই পেয়েছি। প্রতিটা গলিতেই আপনি ট্রাভেল কোম্পানী পাবেন যারা হাজার হাজার প্যাকেজ নিয়ে বসে আছেন আপনার জন্যে। ফিফি আইল্যান্ড, জেমস বন্ড আইল্যান্ড, ক্রাবি যেকোনো জায়গার প্যাকেজ আপনি নিতে পারবেন। আমি শুধু ফি ফি আইল্যান্ড এর প্যাকেজ নিয়ে একদিন সারাদিন সেখানে কাটিয়ে এসেছি এবং আরেকদিন পাতং বিচে কাটিয়েছি তাই খুব বেশি ডিটেইল আমার জানা নেই। নির্দ্বিধায় এসব জানার জন্যে আপনি TOB Help Line এ সার্চ করতে পারেন। আমি আমার অভিজ্ঞতাটাই বলি ফি ফি ট্যুরের।

সকাল ৮:৩০-৮:৪৫ এর মাঝে ওরা আমাকে টাইম দিয়েছে হোটেলের সামনে তাদের পিক আপ মাইক্রো আমাকে এসে নিয়ে যাবে এবং না আসলে যেনো আমি তাদের কল দেই, তারা তাদের নাম্বার দিয়ে দিয়েছে। ঠিক ৮:৪৪ এ তারা এসেছে এবং আমাকে নিয়েছে। আপনি নির্ধারিত সময়ে না থাকলে তারা আপনাকে রেখেই চলে যাবে। টাইম ইজ টাইম। ভাগ্যক্রমে হয়তো বেঁচে যেতেও পারেন। তবুও সময় সচেতন হওয়াটাই ভালো কাজ। এরপর এক ঘন্টা ভ্রমণ শেষে তারা আমাকে যেখানে নিয়ে যায় সেখান থেকে আমাদের স্পিডবোট ছাড়ে। তার আগে ফ্রেশ হয়ে, চা কফি কুকিজ খাবার সুযোগ তারা আমাকে সেখানে দেয়। ফুল ফ্রি আনলিমিটেড। এরপর পুরো ফি ফি ভ্রমণ, বোটে আনলিমিটেড কোক এবং ঠান্ডা পানি, দুপুরে বুফে লাঞ্চ (খুবই জঘণ্য) এবং বিকালে হোটেলে পৌঁছে দেয়।

আমাদের যেখানে ব্রেকফাস্ট খাওয়াতে নামিয়েছিলো সেখানে তারা আমাদের নানা ভয় দেখাতে থাকে যে বীচে মাছে পা কাটা যাবে। ৩৫০ বাথের একটা ফালতু স্যান্ডেল কিনতে বলে। ভুলেও কিনবেন না। দেশ থেকে রাবারের স্যান্ডেল নিয়ে যাবেন বা পাতং বিচ থেকে ২০০ বাথ দিয়ে এই জুতা কিনবেন। মোটকথা এমন কিছু পরে যাবেন যাতে পা খোলা না থাকে। আর মোবাইলের একটা কাভার পাওয়া যায় যেটা দিয়ে পানির নিচেও মোবাইলে ইউজ করা যায়। দাম ৮০-১০০ বাথ। পাতং বিচ থেকে এটা কিনে নিবেন। তাহলে পানির নিচে তুলতে পারবেন অনেক ছবি।

এমন ড্রেস পরে যাবেন যা পরে পানিতে নামা যায়। সাথে ব্যাগে প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে যাবেন। ভয় নেই, যখন বিচে নামবেন তখন আপনার ব্যাগ দেখার জন্যে এজেন্সীর লোক ই থাকবে। একদম সেইফ। তারা যদি আপনাকে বলে তারা ৪:২০ এ ছাড়বে তার মানে আপনি ৪:১৫ তে তাদের কাছে ফেরত আসা উচিৎ। নাহয় ঝামেলা পোহাবেন।

নীল পানির সেই বিচ, সেই সমুদ্রের ঢেউ, সারি সারি পাহাড় আর মন জুড়ানো সেই অপরূপ দৃশ্য নিজ চোখে দেখার সুযোগ আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন, তার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এইজন্যে।

ফিফি আইল্যান্ড ঘুরলে আর জেমস বন্ড ঘুরার দরকার নাই, অধিকাংশ মানুষ থেকে এই কথা শুনে আমি আর পরদিন এই প্যাকেজ টা কিনি নাই। সেই টাকা জমিয়ে তার পরদিন শপিং করেছি ব্যাংকক থেকে। আর ফুকেটের শেষ দিন বিচে ঘুরেছি সারাদিন।

পাতং বিচে আপনি টুকটুক/ট্যাক্সি পাবেন এখান থেকে ওখানে যাবার জন্যে। ২০০ বাথের নিচে কেউই যেতে চায় না, দূরত্ব যতো কমই হোক। তাই আমার মতে একটু হাঁটলেই হয়। তবে রাস্তার মোড়ে মোড়ে পেস্ট কালারের জ্যাকেট পরা কিছু স্কুটি ড্রাইভার দাঁড়িয়ে থাকে। যেখানেই যান ৫০ বাথ। আমি দুবার এদের ব্যবহার করেছি পায়ের শক্তি শেষ হয়ে যাওয়ায়। হোটেলের একটা কার্ড সাথে রাখতাম। আর ওরা গুগল ম্যাপে দেখলেও চিনবে। হাঁটলে আপনাকে অনেকেই মাসাজ করার জন্যে ডাকবে। সাবধান!

তবে ফুট মাসাজ টা খুবই বিখ্যাত। দাম ২০০ বাথ। এটা সম্ভবত খুবই আরামের (আমি করাই নাই, কেনো জানি)

পাতং বিচে মজা পাবেন বাংলা রোডে রাতের বেলা হেঁটে। নাইট লাইফ যে কি জিনিস টের পাবেন খুব। বিচে হেঁটেও মজা পাবেন। এই পাতং খুবি সেইফ ট্রাভেলার দের জন্যে।

ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে আপনার কষ্ট অনেক কমে যাবে। ২০০ বাথে স্কুটি ভাড়া নিতে পারবেন ২৪ ঘন্টার জন্যে। আপনার হোটেলের নিচেই পাবেন। নাহলেও অনেক রেন্ট হাউজ আছে। এটা হলে আপনি ঘুরতে পারবেন সব চেয়ে বেশি। এক বাইকে অনায়াসে দুইজন আরামে ঘুরতে পারবেন মোবাইলে ম্যাপ অন রেখে। দয়া করে ওয়ান ওয়ে রোডে উলটা সাইডে বাইক চালাতে যাবেন না। পুলিশ এসে ধরতে পারলে জরিমানা করতে পারে। আর ওদের সিটিজেন রাও খুব সচেতন। কোনো ছাড় দিবেনা আপনাকে।

খাওয়া দাওয়াঃ

ইন্ডিয়ান দোকান গুলোতে যাওয়ার কোনো মানেই হয় না, অনেক দাম। যেই দোকানে দেখবেন পর্ক বিক্রি করছে বা সব আইটেম একই তেলে ভাজছে ওগুলোয় যায়েন না, হারাম হবার চান্স ই বেশি। হালাল ফুড আছে অনেক। আমি খেয়েছি কে এফ সি প্রতি বেলায়। খুবই সাশ্রয়ী। প্রতি বেলায় আমার ২০০ বাথ ও লাগেনি। সাথে ছিলো আনলিমিটেড কোক/পেপসি/ফান্টা। মেশিন আপনার সামনে ওপেন। যখন যেটা মন চায় খাবেন। কেউ কিছু বলবে না।

7 Eleven এবং Family Mart..প্রতি এক-তিন মিনিট হাঁটলে আপনি এগুলা যে কোনো একটা পাবেন ই।

অবাক!! আমি জাস্ট অবাক তাদের এভেইলেবিলিটি-সার্ভিস-প্রাইস দেখে! আমাদের আগোরা বা স্বপ্নের মতো সুপার শপ। কিন্তু সব পাওয়া যায়। সব মানে সব। ওদের ফ্রিজে সিপির ফ্রাইড রাইস চিকেন দাম ৪৭ -৭০ বাথ, স্যান্ডউইচ ২০-৩২ বাথ (এতো বেশি মজার যে প্রতি সকালে আমি তা খেয়েছি,একেকবার একেক ফ্লেবারের)

তাই আমাকে কে এফ সি আর এই দুই সুপার শপের বাইরে কোথাও খেতে হয় নি। টাকা লেগেছে অনেক অনেক কম!!! সব ওরা গরম করে দেয়। আমি ফ্রিজ থেকে বের করে হাসিমুখে প্যাকেট তাদের হাতে দিয়ে বলেছি 'Hot Please' সাথে সাথে রেডি করে দিলো গরম করে।

প্রতিদিন আমার ৫০০ বাথে ৩ বেলার খাবার হয়ে গিয়েছে এই কে এফ সি আর ঐ দুই সুপার শপের কারণে। আর এই শপ গুলা এতো বেশি যে আপনি দেখতে দেখতে বিরক্ত ও হয়ে যেতে পারেন। তবে ব্যাংককে আমি শুধু 7 Eleven ই দেখেছি। কিন্তু অগুণিত। মানে অভাব নেই। কোনো কষ্টই হবেনা খুঁজতে। স্ট্রীট ফুড খেতে পারেন, কিন্তু যারা পর্ক আইটেম বানায় তাদের টা খাবার দরকার নাই। আর স্ট্রীট ফুড ও দাম খুব। আর আছে ফ্রুটস। মানুষ পাগলের মতো খেয়েছে! অনেক অনেক ফ্রুটস শপ! খেতে পারেন। তাদের প্রেজেন্টেশন ভালো ছিল ফ্রুটের।

ব্যাংককঃ

ব্যাংকক ট্যুর নিয়ে অসংখ্য পোস্ট আছে, তাই আমি আর আমার দীর্ঘ পোস্টে তার ডিটেইল লিখলাম না। তবে ব্যাংককে ও সেই বাইক সার্ভিস টা আছে। যেখানে যান টুকটুক/ট্যাক্সি এর চাইতে কম নেবে। বাইক ওয়ালারা ২০-৪০ বাথ বাড়ায়ে ভাড়া চাইতে পারে। দামাদামি করলে ঠকবেন না। আমি চড়েছি স্কাই ট্রেনে। স্ট্যান্ড গুলোকে তারা BTS বলে। আকর্ষণীয় স্থানগুলো BTS এর আশে পাশেই। খরচ ও কম। মেট্রোরেল ই বলা চলে এটাকে। আমি এটাতে করে করেই ব্যাংকক ঘুরেছি, শপিং সেন্টারে গিয়েছি এবং হোটেলে গিয়েছি। খুবই ক্লিয়ার ডিরেকশন দেওয়া তাই পথ হারানোর ভয় নেই। ভুলে আগে বা পরে নেমে গেলেও আপনি আবার পরের ট্রেনে ব্যাক করতে পারবেন বা এগিয়ে যেতে পারবেন। আপনি সারাদিন চাইলে এই রেলে করে শহরের এই মাথা থেকে ওই মাথা ভ্রমণ করতে পারবেন।।কিন্তু টিকেট টা যেই স্টেশন পর্যন্ত কেটেছেন ওখান দিয়েই শুধুমাত্র আপনি এক্সিট করতে পারবেন।

আজ তাহলে এতোটুকুই থাকুক। মানুষ হিসেবে আমার চিন্তায়, লেখায়, অবজার্ভেশনে ভুল থাকতে পারে। ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। এছাড়া কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জিজ্ঞাসা করতে পারেন। জ্ঞানের মধ্যে থাকলে জানিয়ে হেল্প করবো।

একটা কথা না বলে পারছিনা আসলে।থাইল্যান্ডের সর্বত্র মেয়েদের জয় জয়কার। দোকান,হোটেল রিসিপশন, ড্রাইভার,বাস ড্রাইভার,হেল্পার, কারেন্সি সেলার। মানে আমি সর্বত্র মেয়েদের আধিপত্য দেখেছি। তারা খুব নম্র হয়। কিন্তু সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের ক্ষেত্রে তারা ০ টলারেন্স করে। কারো দিকে এমনভাবে তাকানো ও উচিৎ নয় যাতে সে অফেন্ড ফীল করে, সে যেই দেশের ই হোক। মনে রাখতে হবে আমি সেখানে আমার দেশকে রিপ্রেজেন্ট করছি। ফি ফি আইল্যান্ডে যাবার সময় ও বিভিন্ন দেশের মেয়েরা ছিলো। বোটে উঠার আগেই তারা ছোট জামা পরে নিয়েছিলো। এক পাকিস্তানি বা ভারতীয় সম্ভবত তাদের দিকে বাজে ইশারায় বারবার তাকাচ্ছিল। ওরা বোটের অথরিটিকে ইশারায় হোক বা যেভাবেই হোক কিভাবে যেনো বিষয়টি অবগত করে। কিছুক্ষণ পর দেখি ঐ লোককে বোটের সামনে নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিয়েছে যেখান থেকে ওর এক্টিভিটি সবাই দেখতে পাবে। এরকম নীরব অপমান আসলে ওর প্রাপ্য ছিলো। আমি না জানলেও, অথরিটি কিন্তু জানে লোকটি কোন দেশের। তাই এসব বিষয়ে খেয়াল রাখা জ্বরুরী।

এপ্রক্সিমেট একটা হিসেব দিয়ে দি টোটাল বাজেটের।

*দেশ থেকে প্লেন ভাড়া (আসা যাওয়া)১৮০০০-২৫০০০

*ব্যাংকক থেকে ফুকেট প্লেন ভাড়া (আসা যাওয়া)৫০০০ (কম এ পাবেন শিওর)

*প্রতিদিন খাওয়া ১২০০-১৫০০ টাকা

*ফি ফি আই ল্যান্ড ট্যুর ২৭০০ টাকা

*পাতং বিচ হোটেল/হোস্টেল ১০০০ টাকা পার নাইট

*ব্যাংকক হোটেল/হোস্টেল ১০০০-২৫০০ টাকা পার নাইট

এগুলো মোটামুটি ফিক্স এ একজন বাজেট ট্রাভেলার এর হয়ে যাবে। ট্রাস্ট মি, আপনি চালাক আর বিচক্ষণ হলে এর চাইতে অনেক অনেক কমে ট্যুর কমপ্লিট করতে পারবেন। কোথায় কদিন থাকবেন তা আপনার ব্যাপার। সেভাবে আপনি হিসেব করে নেবেন।

টিওবি হেল্পলাইনে আপনি ব্যাংকক /থাইল্যান্ড /ক্রাবি/ফুকেট/জেমস বন্ড আইল্যান্ড/পাতায়া লিখে সার্চ করলে অনেক অনেক ইনফো পাবেন। কোনটায় আগে যাবেন কোনটায় পরে যাবেন, কোথা হতে কোথায় যাবেন এগুলা সব ই সেখান থেকে জেনে নিজেই একটা ট্যুর প্ল্যান সাজিয়ে ফেলতে পারেন। এছাড়া কোনো প্রশ্ন মনে যেভাবে আসে সেভাবেই লিখে গুগলে সার্চ করলে অসংখ্য ব্লগ এবং সাইটে চমৎকার সব তথ্য পাবেন। বাকিটা নিজের বুদ্ধিতে আগাবেন।

যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। কোনো দেশেই না। পাতং বিচ রোডে আমার সামনে একজন রাস্তায় একটা টিস্যু ফেলে আনমনে হেঁটে চলে যাচ্ছিলেন। কোথা থেকে এক থাই ব্যাক্তি স্কুটি থামিয়ে এসে টিস্যু টা নিয়ে গিয়ে ঐ লোকের কাছে টিস্যু টা হাতে দিয়ে আসলেন এবং একটা শব্দ উচ্চারণ করলেন 'Dustbin'। তাই আমাদের এগুলো সাবধানে খেয়াল রাখা উচিৎ।

ট্রাভেলার্স অব বাংলাদেশ এর যে কয়জন মানুষ এর কাছে বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞ তাদের মধ্যে সবার নাম এই মূহুর্তে মনে করতে পারছিনা। বাদল ভাই, রায়হান ভাই, ফয়সাল ভাই এই মানুষগুলা আমাকে না চিনেও ফোনে সময় দিয়েছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। আরো দুইটা ভাইয়া আছেন চ্যাটে ও তাদের খুজে পাচ্ছিনা। কিন্তু তাদের সাথেও আমি ঘন্টার উপর কথা বলে ইনফো নিয়েছি এবং সত্যি বলতে দেশে থেকেই আমার ট্যুরে কোথায় কি হবে কি আছে, কই গেলে ডানে যাবো, কই গেলো বামে যাবো এসব সব আমার মুখস্ত হয়েছে এই ভাইয়া এবং আপুগুলোর জন্যেই। অসংখ্য মানুষকে আমি নক করে ইনফরমেশন নিয়েছি যাদের কারণে একটা ট্যুর এজেন্সি ছাড়াও একা গিয়ে একটা ভিনদেশে খুব ঝামেলাহীন ভাবে অসাধারণ কিছু মূহুর্ত কাটিয়ে এসেছি। আপনাদের ধন্যবাদ জানাই এবং আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের জন্যে মন থেকে দোয়া থাকবে সবসময়। <3

1 Dollar=32 Baht

1 Baht=2.5tk

Tour way : Dhaka-Bangkok-Phuket-Bangkok-Dhaka

বিঃদ্রঃ মেঘের ছবিটি ব্যাংকক এয়ারপোর্ট থেকে টেক অফ করার পর তোলা। অনেক ভালো লেগেছে মেঘের এই কাছে চলে আসা। বাকি দুটো নীল পানির ছবি হলো ফি ফি আইল্যান্ড যাবার পথে। আপনি আমাকে বিশ্বাস করতে হবে যে ছবিগুলো অতিরিক্ত এডিটেড নয়। সামান্য একটু ব্রাইটনেস বাড়ানো হয়েছে HDR থেকে ছবিগুলো স্পষ্ট করার জন্যে। আর প্যারাসেইলিং এর এই ছবিটি পাতং বিচ থেকে পড়ন্ত বিকেলে তোলা।


সবাই অনেক ভালো থাকবেন। অনেক অনেক শুভকামনা রইলো আপনি যদি এই লেখাটি পড়ে থাকেন। হ্যাপী ট্রাভেলিং....

Written Byরিদওয়ান ফারহান

#থাইল্যান্ড_ভ্রমণ #ব্যাংকক_ভ্রমণ #ফুকেট_ভ্রমণ
  • Share
  • Tweet
  • Share

You Might Also Like...

Land of smile - থাইল্যান্ড ভ্রমণ
ব্যাংকক ও পাতায়া ভ্রমণ

Leave a Reply

By posting comment you will be registered as a user. You can log in by this credential in the future.
Or, fill the comment and register with social network

0 Comments

  • Share
  • Tweet
  • Share

DURBEEN TRAVEL & TOURISM
  • Home
  • About
  • Contact
support@durbeentravel.com

Copyright © 2018 by Shunno-ek Technology. All Rights Reserved.
  • Log in

Sign In

Chose One of the Following Methods.

With Facebook
Or

Sign in Using Your Email Address

Forgot Password?
Don't have an account? Sign up Now