• Create A Story
  • Find A Story
  • My Story List
  • Join Our Trip
  • Create A Story
  • Find A Story
  • My Story List
  • Join Our Trip

কক্সবাজার ভ্রমণ 5

A Travel Guide
In
167 views

কক্সবাজার ভ্রমণ

ভ্রমন ডায়েরীঃ কক্সবাজার

18 Dec 2019, 11:12 pm
( 1135 words, Reading Time: 5.68 min)

সময়ঃ ৩ রাত, ২ দিন
সদস্যঃ ৫ জন

ভ্রমন স্থানঃ কুতুবদিয়া, মহেশখালী, হিমছড়ি, ইনানী বীচ

জুলাই মাসের ৫ তারিখ শুক্রবার বিকেলে প্ল্যান করলাম ঝর্না দেখতে রাঙ্গামাটির বিলাইছড়ি যাব। পুরো সপ্তাহ বৃষ্টি হওয়াতে ঝর্নায় প্রচুর পানি পাব এই আশা নিয়ে ১১ তারিখ রাতের ঢাকা টু কাপ্তাই শ্যামলী বাসের টিকিট কাটলাম। কিন্তু যাওয়ার আগে গাইডের থেকে জানতে পারলাম অতিরিক্ত বৃষ্টির কারনে ধুপপানি যাওয়া যাবে না। যেহেতু বাসের টিকিট কাটা হয়ে গেছে তাই প্ল্যান করলাম চিটাগাং নেমে কক্সবাজার যাওয়ার।

দিনঃ ০০
রাত ১০.৩০ এ আমরা ৫ জন সায়দাবাদ থেকে কাপ্তাইগামী বাসে উঠলাম। উদ্দেশ্য কক্সবাজার।

দিনঃ ০১
ভোর ৪ টায় বাস আমাদের চিটাগাং বদ্দরহাট নামিয়ে দিল। কিছু দূর হাটার পর কক্সবাজারগামী একটা লোকল বাস পেলাম। যেটার প্রথম যাত্রী আমরাই ছিলাম। যেহেতু প্রথম দিন কুতুবদিয়া ঘুরব তাই চকোরিয়া নেমে গেলাম। চকোরিয়া থেকে একটা সি.এন.জি রিজার্ভ নিলাম মগনামা ঘাট পর্যন্ত। ১ ঘন্টার বেশি সময় লাগল মগনামা ঘাট পৌছাতে। রাস্তার দুপাশের দৃশ্য অসম্ভব সুন্দর ছিল। মগনামা ঘাট থেকে কুতুবদিয়ার ২টি ঘাটের উদ্দেশ্যে ট্রলার ছেড়ে যায়। একটি হচ্ছে বড়ঘোপ ঘাট যেখান থেকে উপজেলা পরিষদ, বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র, হোটেল কাছে এবং আরেকটি হচ্ছে দরবার ঘাট যেখান থেকে লাইট হাউজ কাছে। আমরা বড়ঘোাপ ঘাট যাওয়ার ট্রলারে উঠে পড়ি। ট্রলার ছাড়ার ‍কিছুক্ষন পরই সমুদ্রে বৃষ্টি দেখার সৌভাগ্য হল। প্রায় ৩০-৩৫ মিনিট লাগল আমাদের বড়ঘোপ ঘাটে পৌছাতে। ঘাটে নেমে একটা অটো নিয়ে চলে গেলাম হোটেল সমুদ্র বিলাসের সামনে। সকালের নাস্তাটা আমরা সমুদ্র বিলাসের দোতালার রেষ্টরেন্টে করি যেখান থেকে সমুদ্রের ইনফিনিটি ভিউ পাওয়া যায়। যেহেতু রাতেই কক্সবাজার ফেরার প্ল্যান তাই আমরা হোটেল সমুদ্র বিলাসে না উঠে কম টাকায় উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে উঠি। যারা কুতুবদিয়া ঘুরতে আসবেন তারা অবশ্যই এখানে এক রাত থাকার প্ল্যান করবেন এবং ভাড়া একটু বেশি হলেও সমুদ্র বিলাসে উঠবেন। ফ্রেস হয়ে আমরা কুতুবদিয়া সি-বীচে চলে যাই। পুরো বীচে একমাত্র আমরাই পর্যটক ছিলাম। যারা ভীড় এড়িয়ে ঘুরতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এ বীচটি স্বর্গরাজ্য। তবে কুতুবদিয়া বীচের বাজে দিক ছিল পুরো বীচে জুড়েই মানুষের মল মূত্র। অবশ্যই হাটার সময় মাটির দিকে তাকিয়ে হাটবেন। প্রায় ২ ঘন্টা সমুদ্রে গোসল করার পর আমরা হোটেলে ফিরে আসি। গোসল করে দুপুরের খাবার খেয়ে আমরা একটা সি.এন.জি নিয়ে চলে যাই বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র দেখতে। বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও তার পাশের সি-বীচ ছিল দেখার মত একটা জায়গা। পাথরে বাধানো পাড়ে বসে নির্জন সমুদ্র দেখতে ভালই লাগছিল। বীচে কিছু সময় কাটানোর পর আমরা আবার হোটেলে ফিরে আসি এবং ব্যাগ নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি বাতিঘর দেখার জন্য। আমরা একটা সি.এন.জি রিজার্ভ নেই যেটা আমাদের প্রথমে নিয়ে যাবে বাতিঘরে। বাতিঘর ঘুরার পর আমাদের নামিয়ে দিবে দরবার ঘাটে। প্রায় ৫০ মিনিট লেগেছিল আমাদের বাতিঘর পৌছাতে। খুব এক্সাইটেড ছিলাম বাতিঘর নিয়ে কিন্তু যাওয়ার পর যা দেখলাম তাতে কিছুটা বিরক্ত হলাম। একটা মোবাইল টাওয়ারের মত লম্বা টাওয়ারের উপর বাতি বসানো। বাতিঘর থেকে হেটে কিছুটা সামনে গেলে বীচের দেখা পেলাম যেটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ট একটা সি-বীচ। যদিও এখানে খুব একটা সময় কাটাতে পারি নি কিন্তু এ সী-বীচটাই ছিল আমাদের দু দিনের ট্যুরের সবচেয়ে দারুন স্পট। বীচে ১০ মিনিটের মত ছবি তুলে সি.এন.জিতে উঠে পড়ি। প্রায় ৩০ মিনিট পর আমরা পৌছাই দরবার ঘাট। পথে কুতুবদিয়া মাজারে যাওয়ার সুযোগ ছিল কিন্তু কেউ আগ্রহ না দেখানোতে যাওয়া হয়নি। ঘাটে পৌছানোর পর উঠে বসলাম মগনামা ঘাটের ট্রলারে। প্রায় ৩০ মিনিট লাগল মগনামা ঘাটে পৌছাতে। পুরোটা পথ সঙ্গী ছিল বৃষ্টি। ঘাটে নেমে চকোরিয়াগামী লেগুনাতে উঠে পড়ি। চকোরিয়া গিয়ে কিছুক্ষন দাড়ানোর পর কক্সবাজারগামী একটা হানিফ বাস পেয়ে যাই এবং প্রায় ১.৩০ ঘন্টা পর আমরা কলাতলী মোড়ে পৌছাই। কলাতলী মোড়ে নেমে প্রথমেই হোটেল খুজতে বের হই। দামাদামি করার পর ৭০০ টাকায় দুই বেডের একটা রুম নেই। ফ্রেস হয়ে রাতের খাবার খেয়ে আমরা চলে যাই সুগন্ধ্যা বীচে। শুক্রবার হওয়াতে ভালই টুরিষ্ট ছিল বীচে।

দিনঃ ০২
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে একটা অটো নিয়ে পৌছে গেলাম ৬ নং ঘাটে। ঘাটে গিয়ে জানতে পারলাম ১১ টার আগে কোন ট্রলার মহেশখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে না তাই বাধ্য হলাম স্পিডবোডে উঠতে যেটাতে সময় খুব কম লাগলেও ভাড়া ছিল বেশি। ঘাটে নেমেই ৩০০ টাকায় একটা অটো ভাড়া করলাম মহেশখালীর সব স্পট ঘুরে দেখার জন্য। মহেশখালীর অটো চালকদের বাটপারির কথা কারোরই অজানা নয় তাই দরদাম করার সময় ভাড়া এবং কি কি প্লেস ঘুরাবে সব মোবাইলে রেকর্ড করে নিলাম।

মহেশখালীতে যা দেখলামঃ
১) আদিনাথ জেটি ব্রীজ
২) শ্রী শ্রী আদিনাথ মন্দির
৩) বৌদ্ধ বিহার
৪) স্বর্ন মন্দির


অল্প সময়ে অনেককিছু ঘুরানোর পর অটো আমাদের আবার ঘাটে নামিয়ে দিল। এবারও সময় বাচানোর জন্য স্পিড বোটে করে ফিরার সিদ্ধান্ত নিলাম। কিন্তু স্পীড বোড ছাড়ার একটু পর শুরু হল বৃষ্টি। সমুদ্র্রে ঢেউ বাড়তে শুরু করল। প্রথমে খুব একটা ভয় না পেলেও পরে যখন উত্তাল সমুদ্রে আমাদের স্পীড বোট ঢেউয়ের সাথে ধাক্কা খাচ্ছিল তখন স্থানীয়রাই আল্লাহকে ডাকা শুরু করে দেয় আর আমাদের কথা নাই বললাম। প্রতিবার ঢেউয়ের সাথে ধাক্কা লাগার পর মনে হচ্ছিল এই বুঝি উল্টে যাবে আমাদের স্পীড বোট। গ্রুপে ৫ জনের মধ্যে ৩ জনই সাতার জানতাম না আবার স্পীডবোটে লাইফ জ্যাকেটও ছিল না। সব কিছু মিলে খুবই বাজে অভিজ্ঞতা ছিল। প্রায় ১০-১৫ মিনিট এভাবে চলার পর যখন দুপাশে পার দেখতে পেলাম তখন মনে হচ্ছিল নতুন জীবন পেয়েছি। ঘাট থেকে অটো নিয়ে হোটেল ফিরে এসে সবাই ড্রেস চেঞ্জ করে লাবনী পয়েন্টে চলে যাই। কিন্তু বীচে গোসল করতে নামার পর দেখতে পেলাম কক্সবাজারের আসল সৌন্দর্য্য যেখানে প্রতিটা ঢেউয়ের সাথে চিপসের প্যাকেট, চানাচুরের প্যাকেট, স্যালাইনের প্যাকেট, কাগজের প্যাকেট, বিভিন্ন পলি গায়ের উপর আচড়ে পড়ছিল। বছরের পর বছর ধরে আমরা সমুদ্রকে যা দিয়েছি তাই হয়ত সমুদ্র আমাদের ফিরৎ দিচ্ছে। ১ ঘন্টা গোসলের পর সবাই হোটেলে ফিরে রুম ছেড়ে দেই। ব্যাগ রিসেপশনে রেখে বেড়িয়ে পড়ি হিমছড়ি ও ইনানি ঘুরার জন্য। কলাতলী মোড় থেকে ৬০০ টাকায় একটা আপ ডাউন অটো ঠিক করি। প্রথমে যাই ইনানী। জোয়ারের কারনে প্রবাল দেখতে না পেরে অল্প সময় কাটিয়েই হিমছড়ি চলে যাই। জনপ্রতি ৩০ টাকায় টিকিট কেটে ভিতরে ঢুকে পাহাড়ের উপর দাড়িয়ে কিছুক্ষন সমুদ্র দেখে ফিরে আসি কলাতলী মোড়ে। লাবনী পয়েন্টের কোন এক দোকান থেকে বিরিয়ানী খেয়ে আমরা উঠে পড়ি শ্যামলীর রাত ১০ টার বাসে। চিটাগাং এর পূর্বে রাস্তায় পানি উঠে যাওয়ায় ঢাকা পৌছাই পরের দিন রাত ১০ টায়। দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টার জার্নি ছিল লাইফের সবচেয়ে বড় বাস জার্নি।


খরচের হিসাবঃ

আমাদের জনপ্রতি টোটাল খরচ হয়েছিল ৩২০০ টাকা করে।

চিটাগাং থেকে চকোরিয়া লোকাল বাসে জনপ্রতি - ১২০ টাকা
চকোরিয়া থেকে মগনামা ঘাট সি.এন.জি - ৩৫০ টাকা
ঘাটের খরচ জনপ্রতি - ৫ টাকা
মগনামা ঘাট - বড়ঘোপ ঘাট ট্রলারে জনপ্রতি - ২০ টাকা
বড় ঘোপ ঘাট থেকে উপজেলা পরিষদ অটোতে জনপ্রতি - ১০ টাকা
এক বেলার জন্য উপজেলা পরিষদ ডাক বাংলোতে হোটেল ভাড়া - ৩০০ টাকা
উপজেলা পরিষদ থেকে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র সি.এন.জি আপ-ডাউন - ২০০ টাকা
উপজেলা পরিষদ থেকে লাইট হাউজ হয়ে দরবার ঘাট সি.এন.জি - ৫০০ টাকা
দরবার ঘাট থেকে মগনামা ঘাট ট্রলার ভাড়া জনপ্রতি - ৪০ টাকা ঘাটের ভাড়া জনপ্রতি - ৫ টাকা
মগনামা ঘাট থেকে চকোরিয়া লেগুনাতে জনপ্রতি - ৪০ টাকা চকোরিয়া থেকে কক্সবাজার বাস ভাড়া জনপ্রতি - ৭০ টাকা কক্সবাজারে হোটেল - ৭০০ টাকা
কলাতলী মোড় থেকে ৬ নং ঘাট অটোতে - ১০০ টাকা (৫ জন)
ঘাট ভাড়া জনপ্রতি - ১০ টাকা (যাওয়া + আসা)
স্পীড বোটে মহেশখালী জনপ্রতি - ১৫০ (যাওয়া + আসা)
মহেশখালী ঘুরার জন্য অটো রিজার্ভ - ৩২০ টাকা
৬ নং ঘাট থেকে কলাতলী মোড় জনপ্রতি - ১৫ টাকা
কলাতলী মোড় থেকে ইনানী ও হিমছড়ি - ৬০০ টাকা
ঢাকা থেকে কক্সবাজার বাসে - ৮০০ টাকা
খাবার খরচ নিজের উপর।


দু/চার দিনের জন্য ঘুরতে গিয়ে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলে বাংলাদেশের প্রতিটা টুরিষ্ট্য স্পটকেই আমরা ভীষন ভাবে নোংরা করে ফেলেছি। দয়া করে যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশ নোংরা করবেন না।

Written Byতুষার হোসেন

#কক্সবাজার_ভ্রমণ #কক্সবাজার #ভ্রমন_ডায়েরী
  • Share
  • Tweet
  • Share

You Might Also Like...

প্রথম সমুদ্র দেখা

Leave a Reply

By posting comment you will be registered as a user. You can log in by this credential in the future.
Or, fill the comment and register with social network

0 Comments

  • Share
  • Tweet
  • Share

DURBEEN TRAVEL & TOURISM
  • Home
  • About
  • Contact
support@durbeentravel.com

Copyright © 2018 by Shunno-ek Technology. All Rights Reserved.
  • Log in

Sign In

Chose One of the Following Methods.

With Facebook
Or

Sign in Using Your Email Address

Forgot Password?
Don't have an account? Sign up Now